খাবার – দাবার এর কথা শুনলেই জিভে জল আসা স্বাভাবিক ব্যাপার। আর সেই জিভের জলের তোড়জোড় বেড়ে যাবে যখন আপনি সদর এলাকায় ১ কি.মি. রাস্তায় পেয়ে যাবেন ছোট বড় মিলিয়ে ২৫ টির বেশী খাবার দোকান। এইসব দোকানে সকাল-দুপুর-বিকাল এর নাস্তাসহ দুপুর-রাতের খাবার খেতে পারবেন। আমাদের আজকের আয়োজন গলাচিপার রেস্টুরেন্ট ও ভাসমান দোকান (স্ট্রিট ফুড) এর কিছু স্পেসাল ও রেগুলার আইটেম নিয়ে।

ফ্রিজের আইসক্রিম ও দধিঃ

ভাবছেন আইসক্রিম-দধি তো ফ্রিজে রেখেই হয় এ আর এমন কি! কিন্তু এখানকার লোকাল – অর্গানিক দুধের তৈরি আইসক্রিমের কি স্বাদ সেটা একবার খেলেই বুঝবেন। আর গ্লাসে রাখা দধির টেস্ট যে একটু আলাদা সেটাও বুঝতে পারবেন। খেতে চাইলে যেতে হবে বটতলার মোড়ের একটু সামনে শাহজাহান এর দোকান, দিলীপ ক্যান্টিন কিংবা আশেপাশের বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে। এছাড়া পূর্ব মাথা কিংবা হলের মোরের বিভিন্ন খাবার দোকানে পাবেন এই অসাধারণ ফ্রিজের আইসক্রিম ও দধি। চাইলে নিতে পারেন সাথে চিড়া-দধির অন্যরকম স্বাদ। বটতলায় আলাদা করে চিড়া-দধির দোকান ও পাবেন।

ফুচকা-চটপটিঃ

এখানাকার চটপটি অন্যান্য এলাকার থেকে অনেকটাই আলাদা। ঝাল- মশলাযুক্ত এই চটপটি খেতে পারবেন আপনার পছন্দমত মাংস কিংবা ডিম দিয়ে। ঝাল-টকের অনন্য স্বাদ যে আপনাকে বারবার টানবে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। আর আপনি যদি মেয়ে হয়ে থাকেন তবে এর প্রেম আপনি এড়াতে পারবেন না। চটপটি খাবার অন্যতম মোক্ষম সময় সন্ধায় তাই সন্ধার আগে এই খাবার আপনি পাবেন না।  খেতে চাইলে যেতে হবে কৃষি ব্যাংকের পাশে রাজীবের ফুচকা- চটপটির দোকানে। এছাড়া পৌরমঞ্চ, সদর রোড, বটতলা, থানার মোড়ে পাবেন ভাসমান গাড়িতে ফুচকা-চটপটির দোকান।

মিষ্টি- রসমালাইঃ

“আমাকে কি ফুটপাতের রসমালাই পাইছো – যে ছোট্ট ছোট্ট গোল্লা হব?” এখানকার রসমালাই আপনাকে যেন এইকথাই বলবে। কেননা এরা সাইজে বড় – একটা খেলেই স্বাদে আত্মহারা হবেন। আর গরুর দুধের ছানার মিষ্টি তো আছেই। সদরের মিস্টির দোকান গুলোতে পাবেন এই রসমালাই ও মিষ্টি। আর একটু স্পেশাল খেতে চাইলে যেতে হবে উলানিয়া বন্দরের আদি সতীশ মিস্টান্ন ভাণ্ডারে। তবে গরম গরম যেখানেই খান না কেন – সেখানেই মজা।

ঘটি-গরম চানাচুরঃ

একটু আলাদা এই চানাচুর চিড়া ভাজা ও বাদাম দিয়ে পরিবেশন করা হয় হালকা গরম অবস্থায়। গলাচিপা শহরে আগে অনেকগুলো ভাসমান ঘটি-গরম চানাচুর এর দোকান ছিলো – বেশিরভাগই ছিলো সিনেমা হল পট্টির দিকে। এখনকার হাতে গোনা দু একটা ঘটি-গরম চানাচুর পাবেন বটতলায় ও সদরে।

মোগলাই – ডাল পুড়িঃ

গলাচিপার মোগলাই ঢাকার মোগলাইয়ের থেকে ছোট এবং অতটা ক্রিস্পি নয়। বরং একটু সফট ও স্বাদেও আলাদাভাবে সুন্দর। আর ডাল-পুড়ি খালি সালাদ কিংবা আলাদা ডাল/ঝোল সবকিছুতেই মজাদার। সন্ধ্যায় সকল রেস্টুরেন্টে পাবেন এই আইটেম।

মাখন-রুটি, ছানাঃ

স্যান্ড-উইচের রুটি আর মাখন চিনি দিয়ে মাখিয়ে খাওয়ার এক অসাধারণ ছোট নাস্তা। আর দুই টাইপের ছানা পাবেন – একটা হালকা পানিতে চুপসানো আর অন্যটি কাঁচাগোল্লার মত। দুটি স্বাদের দিকে আলাদা এবং মজাদার। সন্ধ্যায় অনেক রেস্টুরেন্টে ও দিনভর মিষ্টির দোকানে পাবেন এই আইটেম।

সকালের নাস্তাঃ 

সকল রেস্টুরেন্টেই সকালের নাস্তা হিসেবে পাবেন পরোটা। দোকানভেদে পরোটার টেস্টেও একটু ভেরিয়েশন পাবেন।  কোন কোন রেস্টুরেন্টে পাবেন তন্দুর কিংবা ময়দার রুটি। এর সাথে সব দোকানেই পাবেন  ডাল, ভাজি, মিষ্টি, ডিম। এখানকার ডিমগুলো একদম কড়া ভাজি হয়না – একটু সফট থাকে বিধায় পরোটা দিয়ে খেতে বেশ টেস্ট।  কিছু দোকানে পাবেন ফিরনী,রসমালাই, গরু ভুনা, পায়া, মুরগির-সুপ, কলিজা ভুনা ইত্যাদি। আবার যদি সকালে যদি ভাত খেতে মন চায়- সেই ব্যবস্থা রয়েছে। সদরে হাফেয হোটেল সহ বেশ কয়েকটি হোটেল-রেস্টুরেন্ট রয়েছে যেখানে সকালে ভর্তাসহ মাছ মাংস বিভিন্ন আইটেম দিয়ে ভাত খেতে পারবেন।

দুপুর ও রাতের খাবারঃ

দুপুর বেলায় (১১-০১টা) ছোট বড় সব রেস্টুরেন্টে পাবেন সিঙ্গারা – সমুচা। এই সময়ের ছোট খিদা মিটাতে সিঙ্গারা সমুচা আরেক ধরণের তৃপ্তি নিয়ে আসে।দুপুরে ভাত আর রাতে রুটি দুই ধরণের খাবার পাবেন এখানকার হোটেল ও রেস্ট্রুরেন্টগুলোতে। সাথে রয়েছে ভর্তা, সবজি, মাছ, মাংস, ডাল সহ আরো বেশ কয়েকটি আইটেম। রয়েছে অল্প কিছু সংখ্যক বিরিয়ানি ও খিচুড়ির দোকান।